বিস্ময়কর অতিথি- রহিমা খাতুন



বিস্ময়কর অতিথি
---রহিমা খাতুন
সুজলা শুফলা শশ্য শ্যামলা এই সুন্দর পৃথিবী। বিশ্বব্যাপি চলছিল বেশ আমেজ, উদযাপন আর ভাল লাগা ভালবাসা দিবস পালনের বসন্ত লগ্নে।
বসন্ত বরণ, ভালবাসা দিবস দুয়ে এক হয়ে বেশ আমেজের সাথে পালনের মধ্যে কেটেছে বেশ কিছু দেশে। কোন দেশে চলছিল নবীন কিছু বরণের প্রস্তুতি।
আমাদের এই সোনার দেশেও ঠিক তেমনি করে চলছিল মুজিব শতবর্ষ পালনের জাঁকজমকপূর্ণ প্রস্তুতি।
বিশেষ করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে রমরমা আয়োজন করে উদযাপন করার লক্ষ্যে বেশি যায়গা নিয়ে অনেক অর্থের বিনিময়ে নির্মান হচ্ছিল মুজিব ভাষ্কর্য। আড়ম্বরপূর্ণ  ভাবে পালনের জন্য বাইরের দেশ থেকে আনা হচ্ছিল সুবিধাবাদী মেহমান।
এসব কিছুর আগেই পৃথিবীর কোন কোন যায়গা হয়ে গেল স্তব্ধ!! নির্মল রাস্তা ঘাট, নিরিবিলি পরিবেশ, নেই কোন কোলাহল।
কারণ খুঁজে দেখা গেল যে পৃথিবীতে এক নতুন অতিথি এসেছে। কিন্তু পৃথিবীর মানুষ গুলো তাকে সহজ ভাবে আপ্যায়ন করছে না, কেন যেন দুর দুর করে তাড়িয়ে দিতে চাচ্ছে।
কি অদ্ভুত ব্যাপার!!
নতুন অতিথীকে আপ্যায়নের বদলে রিক্ত ব্যবহার!!!
সে কিছুতেই মেনে নিতে রাজি না।
এই রহস্যজনক অতিথি সর্বপ্রথম চীনের উহান প্রদেশ সফরের জন্য বেছে নিয়েছিল। আস্তে আস্তে বংশ বিস্তার করে করে সে একে একে পৃথিবীর সকল দেশে ভ্রমনের প্রস্তুতি নিল।
আহা! কি অলৌকিক!!!
এমন এক গুরুত্বপূর্ণ অতিথিকে সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব মানুষ, তাকে বিনা লেন্সে দেখতেই পারে না!!!
না দেখতে পেয়েই সকল মানুষ তার আপ্যায়নের ভয়ে ঘরে আটকা হয়ে আছে, দেশে দেশে জারি হয়ে আছে কার্ফিউ। সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, ব্যাংক সহ পৃথিবীর মানুষের ঘরের বাইরের সকল কর্মকাণ্ড বন্ধ করে শুরু হলো বন্দি জীবন।
যখন সেই বিস্ময়কর আগন্তুক কোন মানুষকে আক্রান্ত করছিল তখনই ঘটছিল আরো বিস্ময়কর ঘটনা। একে একে তার সব আত্মীয় স্বজন তাকে পরিত্যাগ করতে শুরু করল। এক পর্যায়ে এই অতিথিই থাকল তার একমাত্র সঙ্গী।
কিছুদিনের মধ্যেই মানুষটিকে পৃথিবীর সময় শেষ করে চলে যেতে হচ্ছে আর এক জগতে।
কোন ভাবেই এই অতিথির অপরাধের প্রতিশোধ নেয়ার সাহস কেউ রাখছে না।
সে ঠিকই থেকে যাচ্ছে ভুবন সফরে।
আর মানব যন্ত্র গুলো অকেজো করেই যাচ্ছে প্রতিটি ক্ষণে।
একের পর এক সে এভাবে পরপারে পাঠাচ্ছে অসংখ্য মানুষ। আর সে নিজে পৃথিবীতে এক সুন্দর পরিবেশ তৈরী করে নিচ্ছে তার বসবাসের জন্য।।।
স্রষ্টার সৃষ্টি এত বৈচিত্র্যপূর্ণ!!
ভাবতেই অশ্রু ঝরে!!!
রহস্যময় এই ক্ষুদ্র অতিথি ক্রমেই মহামারী আকার ধারণ করে। তার রিক্ততায় পুরো পৃথিবী থমথমে, নিস্তব্ধতা চারিদিক।
রাস্তায় নাই গাড়ি, নাই মানুষের ভীড় শহরগুলোতেও।
সব দেশই নীতিমালা প্রনয়ন করছে একে তাড়াবার জন্য। চাচ্ছে না তার সঙ্গ ।
শুধু আতঙ্ক!!!
এই বুঝি জীবনটা গেল!!!
এই বুঝি নতুন অতিথি আমার সাথী হলো!!
এই বুঝি সে আমাকে পরপারে নিয়ে যাবে!
কি ভয়ঙ্কর এই দুর্যোগ যাতে নেই বিদ্যুৎ চমকানি,
নেই রবের আকাশে কালমেঘ
কিন্তু মানব মনের আকাশে ঘুটঘুটে কালো অন্ধকার বিরাজিত।
বন্ধ হলো সব অপকর্ম, বন্ধ হলো সুবিধাবাদি অতিথির আগমন যা বন্ধ করার জন্য এদেশের বিপ্লবী জনতা সংগ্রামের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। কিন্তু রাজাধিরাজ মহান বাদশা সর্বশক্তিমান আল্লাহ কবুল করে নিলেন তাঁদের মনের আশা।
বিনা সংগ্রামেই বন্ধ হলো সুবিধাবাদি অতিথির আগমন সেই সাথে বন্ধ হলো অসংখ্য বাঙালি মুসলিমের শির্কে মত্ত হওয়ার মুহুর্ত।
এমন সব কঠিন মুহুর্তেও শয়তান তার কাজ থেকে অবসর নেয় নি। সে সর্বদা মানুষকে পথভ্রষ্ট করতে উদ্ধত। প্রতিনিয়ত সে গুজব ছড়িয়ে সাধারণ মুসলিমদেরকে কৌশলে শির্কে লিপ্ত করছে ।
যে মুসলিম জানে না কিভাবে নামাজ পড়তে হয়, সে জানে না কিভাবে মহান সৃষ্টি কর্তার প্রসংশা করতে হয়, কিভাবে রবের কাছে কৃত পাপের অনুশোচনা করে ক্ষমা চাইতে হয় জানে না সে, জানতেও চায় নি কোনদিন। কেউ কখনো জানাতে চাইলেও সে বিরক্ত বোধ করত।
এ অতিথী তাকে বুঝাতে পেরেছে আল্লাহ সর্বশক্তিমান। তিনি ছাড়া কেউই কঠিন মূহুর্তে পাশে থাকে না হোক সে জীবনের সবচেয়ে প্রিয়জন।তাই সে এখন রবের প্রশংসায় পঞ্চমুখ,তওবা করা শিখেছে,পবিত্রতা শিখেছে, নামাজ পড়তে শিখেছে।
যে বিধর্মীরা মুসলিমদেরকে অত্যাচারের পর নির্মম অত্যাচার করত, নামাজ পড়তে দিত না, রোজা রাখতে দিত না। আল্লাহকে ভুলে গিয়ে মূর্তিপুজা করত,আল্লাহকে অপমান করত।
যাদের নির্যাতনে মুসলিম নারীপুরুষ ও শিশুগুলো মাজলুম হয়ে অকথ্য নির্যাতন স্বীকার করে চুপে চুপে করুণ সুরে আল্লাহর কাছে আর্তনাদ করছে--
"হে আমাদের রব! এই জনপদ থেকে আমাদের বের করে নিয়ে যাও, যার অধিবাসীরা জালেম এবং তোমার পক্ষ থেকে আমাদের জন্য কোন বন্ধু, অভিভাবক ও সাহায্যকারী পাঠাও" (নিসা-৭৫)
পৃথিবীর ক্ষমতাধর পরাশক্তিগুলো যখন নতুন নতুন রাসায়নিক অস্ত্র তৈরি করে গর্ব অহংকারের প্রতিযোগিতা করে লক্ষ কোটি মানব সন্তান হত্যার হলি খেলায় মত্ত, তখন এই সামান্য অতিথি ভাইরাসের কাছে তারা অসহায় হয়ে গেল!! চূর্ণ বিচূর্ণ হলো তাদের ক্ষমতার মাসনাদ।।
আজ তাদের কাছে স্পষ্ট হয়ে গেল,
আল্লাহ সর্বশক্তিমান,
আর মুসলিম সর্বশ্রেষ্ঠ জাতি,
আল কোরআন সর্বশ্রেষ্ঠ ও সার্বজনীন জীবন বিধান।
মাসজিদ সর্বশ্রেষ্ঠ পবিত্রস্থান।
আল্লাহ মহান,
তিনি রহিম, তিনি রহমান।
বন্ধ হয়ে গেল তাদের সেই অবর্ণনীয় নির্যাতন।
কি চমৎকার!!
সামান্য এক নবীন অতিথি যা আনুবীক্ষণিক জীব, জালিমের অত্যাচার,অপকর্ম এক মুহূর্তে ধ্বংস করে দিল???
কে এই রহাস্যজনক অতিথি?
কি তার পরিচয়?
কেন এল সে পৃথিবীতে?
কে পাঠালো তাকে?
কেন পাঠালো তাকে???
খুব জানতে ইচ্ছে করে এই অতি আণুবীক্ষণিক বিস্ময়কর এই অতিথি সম্পর্কে যার কর্মকাণ্ড এত রহস্যজনক!!!
এই নতুন অতিথির নাম "করোনা"। যা একটি ভাইরাস যার প্রাণ নাই কিন্তু প্রাণী দেহের ভিতর গেলে প্রাণীর বৈশিষ্ট্য অর্জন করে যাকে বলে জীব ও জড় পদার্থের সেতু বন্ধন।
করোন শব্দের অর্থ পুষ্পমাল্য বা পুষ্পমুকুট।
ড্যাফোডিলের পাপড়ি বেষ্টনের মাঝে যে অংশটি ট্রাম্পেটের মত বেরিয়ে থাকে, সেটাকে উদ্ভিদবিজ্ঞানে করোনা বলে।
আর এ আগন্তুককে দেখতে ঠিক সেরকমই,তাই পৃথিবীর প্রায় সর্ব স্তরের মানুষ করোনা নামেই তাকে বেশি চেনে।
এই অতিথীর আরো চমৎকার কিছু নাম আছে।... যেমন: 'চায়না ভাইরাস', 'করোনা ভাইরাস', '২০১৯ এনকভ', 'নতুন ভাইরাস', 'রহস্য ভাইরাস' ইত্যাদি।
এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা রোগটির আনুষ্ঠানিক নাম দেয় কোভিড-১৯ যা 'করোনা ভাইরাস ডিজিজ ২০১৯'-এর সংক্ষিপ্ত রূপ।
কিন্তু, কি এমন প্রয়োজন ছিল তার, পৃথিবীতে আসার?
আর শুধু আসা ই নয়, এসে শুরু করল এক বিপর্যয়!!!
মৃত্যু হলেও নেই জানাজা, নেই ভাল ভাবে কবর দেয়ার মত কেউ।
এত নির্মম সাথী, এই নতুন অতিথি!!
আমাদের সৃষ্টি কর্তা সব কিছু দেখেন, শোনেন, জানেন। কোন কিছুই তার জ্ঞানের বাইরে নয়।
তিনি বলেছেন,
"পৃথিবীতে এবং তোমাদের নিজেদের ওপর যেসব মুসিবত আসে তার একটিও এমন নয় যে, তাকে আমি সৃষ্টি করার পূর্বে একটি গ্রন্থে লিখে রাখিনি৷ এমনটি করা আল্লাহর জন্য খুবই সহজ কাজ৷"
--সুরা হাদিদ-২২
হ্যাঁ। মহান সৃষ্টিকর্তা-ই আমাদের কাছে এই বিপর্যয় সৃষ্টিকারী মেহমান পাঠিয়েছেন!!!
তিনি আমাদের অনেক ভালবাসেন, কত অন্যায় করি, তিনি ক্ষমা করে দেন। আমাদের অবকাশ দেন যাতে আমরা ভুল সুধরে নিতে পারি। তিনি আমাদের এক পরিপূর্ণ জীবন বিধান দান করেছেন যা জীবন যাত্রাকে সহজ করে দিয়েছে, রাসুল সাঃ কে পাঠিয়ে মহা বিপর্যয় থেকে রক্ষার জন্য সতর্ক করেছেন।
তাহলে সেই মহা দরদী রব্বুল আলামীন কেন আমাদের উপর এত বড় বিপদ দান করলেন??????
তাহলে কি আমরা তার সাথে সীমালঙ্ঘন করে ফেলেছি???
হ্যাঁ, কিছুটা এরকমই।
মানুষ যখন পাপে জরাজীর্ণ হয়ে যায় তখনই মহান রব্বুল আলামীন এরকম কিছু বিশ্ময়কর অতিথী পাঠিয়ে নিরব করে দেন পুরো পৃথিবী, যেমন করেছিলেন বনি ইসরাইলের সীমালঙ্ঘন কারীদের।
মানুষ যখন গোপনে পাপ করতে করতে এক সময় প্রকাশ্যেও পাপ কাজের জন্য সামান্য তম দ্বীধা করে না বরং সে মনে করে এটাই বুঝি তার স্মার্টনেস। এভাবে অশ্লীলতার ছয়লাভ হয় চারিদিকে। ভুলে যায় তারা পরকাল, ভুলে যায় আল্লাহকে।
অসংখ্য পাপের ঘানিতে যখন পূর্ণতা পায় তখনি মহান সুবহানাহু তা'য়ালা ও দেখিয়ে দেন সামান্য এক বিপর্যয় প্রেরণ করে। খুবই ক্ষদ্র একটু জিনিসেই শেষ করে দেন বড় বড় পাপের উৎসগুলো যেমন টা হয়েছিল হাতি ওয়ালাদের সাথে।
মহানবী সাঃ বলেছেন, "কোন জাতির মাঝে যদি অশ্লীল কার্যকলাপ বৃদ্ধি পায় এবং তারা তা প্রকাশ্যে ঘোষনা দিয়ে করে তাহলে আল্লাহ তাদের মাঝে মহামারি ব্যাপৃত করে দেন।এবং এমন সব রোগ দেন যা ইতিপূর্বে কোন জাতীর মাঝে দেখা যায় নি।
--(ইবনে মাজাহ, আব্দুল্লাহ ইবনে উমার রাঃ থেকে)
এছাড়া মহান রব সুরা শুরা ৩০ নং আয়াতে জানাচ্ছেন,
"তোমাদের ওপর যে মসিবতই এসেছে তা তোমাদের কৃতকর্মের কারনে এসেছে৷ বহু সংখ্যক অপরাধকে তো আল্লাহ ক্ষমা করে দিয়ে থাকেন৷ "
আমরা পৃথিবীর সমাজ গুলোর দিকে তাকালে যেটা চোখে পড়েঃ-
★জনসম্মুখে বুক ফুলিয়ে অশ্লীলতার ব্যপকতা,মানুষকে ঠকানো, অন্যায়কে প্রশ্রয় দিয়ে বিচার না করা।
★সমাজে ভাল মানুষ থাকতেও নিজের স্বার্থ রক্ষায় বাতিল মতের সাথে সন্ধি করে সেটাকে বাঁধা না দিয়ে সমর্থন করা।
★ আবার কোথাও ভাল মানুষ অন্যায়ের প্রতিবাদ করলেও তাদের সংখ্যা কম হওয়ায় তাদের টিকে থাকা খুবই কঠিন হয়ে ওঠছে।
উপরোক্ত তিনটি দিক যখন কোন সমাজে বিরাজিত থাকে সর্বশক্তিমান বাদশা রাব্বুল আলামিন তখনই সেই সমাজে বিপদ মুসিবত পাঠিয়ে থাকেন।
আর বর্তমান বিশ্বে ও তা পরিলক্ষিত হচ্ছে এমন সময়েই আগমন আজব এ অতিথির, অভাবনীয় বিনাস ক্রিয়া তার।
তাহলে কি মহান রব আমাদের উপর রেগে আছেন??
হ্যাঁ। সেটাই হবে, আমরা আমাদের কাজ কর্মে এই সুন্দর সুশীতল রহমতে ভরা ভূবনটাকে দুষিত করে ফেলেছি।।।
এখন কি উপায় আছে আমাদের???
আল্লাহ তো মহা ক্ষমাশীল পরম করুনাময়ী। তিনি তো ক্ষমা করতে পছন্দ করেন। তাহলে এখনও কেন আমরা আতঙ্কিত হয়ে বসে আছি???
কেন এত ভয় পাচ্ছি,আমরা যদি আল্লাহকে মনে প্রাণে ভালবেসে থাকি তবে কেন এই মহামারি নবীন অতিথীর ভয়ে নিজেকে এতটা নিকৃষ্ট মনে করছি??
পবিত্র হাদিস থেকে জানতে পারি,
হযরত আয়শা রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি মহামারি রোগ সম্পর্কে রাসুল সাঃ কে জিজ্ঞেস করলেন। তিনি বলেন,এটা ছিল আল্লাহর তরফ থেকে একটা শাস্তি৷ আল্লাহ যাকে চান তার উপর এটা পাঠান। মু'মিনদের উপর এটা রহমত বানিয়ে দিয়েছেন। কোন মু'মিন বান্দা মহামারি রোগে আক্রান্ত হলে যদি সে তার এলাকায় সবর সহকারে সওয়াবের নিয়াতে এ কথা জেনে বুঝে অবস্থান করে যে, আল্লাহ তার জন্য যা নির্ধারণ করে রেখেছেন, তাতেই সে আক্রান্ত হয়েছেন, তাহলে সে শহীদের সওয়াব পাবে।
---বুখারী
মহান সুবহানাহু তা'য়ালা আল ক্বুরআনের সুরা আল বাকারাহর ১৫৫ নং আয়াতে বলছেন,
"নিশ্চয়ই আমি তোমাদেরকে কিছু ভয় ও ক্ষুধা, জান ও মাল এবং ফসলের ক্ষতির মাধ্যমে পরীক্ষা করব। (হে পয়গম্বর!) আপনি ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দিন।"(২:১৫৫)
এর চেয়ে সুসংবাদ আর কি হতে পারে যদি আমরা ধৈর্যশীল হয়ে থাকি!!!
তবু কি আমি আজও চুপ করে বসে থাকব?
আমি কি ক্ষমা চাইব না আমার রবের কাছে?
আমার অশ্রু কি গড়াবে না শেষ রাতে? আমার মাথা কি নত হবে না মহান বাদশা রাব্বুল আলামিনের তরে???
আজ সবচেয়ে বিশ্মিত হতে হয় সেই সব মুসলিমদের দেখে যারা বিধর্মী কাফেরদের ও হার মানাচ্ছে!!!
কিন্তু, যাদের কাজ দেখে পুরা পৃথিবী অবাক হয়ে যাওয়ার কথা।
যাদের কাজ দেখে অমুসলিমদের হৃদয় গলে আল্লাহর প্রসংসায় অশ্রু ঝরার কথা!!
খুবই দুঃখজনক!!
আজ মুসলিমরাই এই দুর্যোগের ভিতর শুরু করেছে তামাসা। তারা মুসলিম হয়েও যায় না একটিবার ও তার রবের দেয়া জীবন বিধানটা খুলে দেখতে, শুধু বিভ্রান্তি, ইসলামের ভিতর নতুন নতুন সংযুক্তি করে শয়তানের মোহ জালে পা দিয়ে সকল বেদায়াতি কর্মে লিপ্ত।
মহামারি তাড়াতে কেউ বলে ক্বুরানের ভিতর রাসুলের চুল আছে সেটা ধুয়ে পানি খেতে,
কেউ বলে থানকুনি পাতা ওমক সময় খেতে,
কেউ এক একটা গুজব উঠিয়ে সমস্ত সাধারণ মুসলিমদের বিভ্রান্ত করে।। যেখানে সাহাবীদের যুগে মহামারি এসেছিল তাঁরা কখনও জীবনবিধান থেকে এক চুল পরিমান সরে যান নি।
হে নামধারী মুসলিম, সাবধান!!!
মহান রব তোমাদের সম্পর্কে ওহী নাজিল করেছেন,
"বলুনঃ আমি কি তোমাদেরকে সেসব লোকের সংবাদ দেব, যারা কর্মের দিক দিয়ে খুবই ক্ষতিগ্রস্ত।তারাই সে লোক, যাদের প্রচেষ্টা পার্থিব জীবনে বিভ্রান্ত হয়, অথচ তারা মনে করে যে, তারা সৎকর্ম করেছে। তারাই সে লোক, যারা তাদের পালনকর্তার নিদর্শনাবলী এবং তাঁর সাথে সাক্ষাতের বিষয় অস্বীকার করে। ফলে তাদের কর্ম নিষ্ফল হয়ে যায়। সুতরাং কেয়ামতের দিন তাদের জন্য আমি কোন গুরুত্ব স্থির করব না।
---(কাহাফ ১০৩-১০৫)
মহান রব তো দয়ার আধার। এখনও সময় আছে, তার দরবারে কেউ অনুতপ্ত হয়ে ক্ষমা চাইলে তিনি কখনও ফিরান না।
এখনি চলো...
তার কাছে অশ্রু ফেলি,
ক্ষমা চাই, তিনি আমাদের ক্ষমা করে দিবেন,
চলো পরিশুদ্ধ হয়ে যাই।
আমরা মুসলিম, আমাদের চরিত্র আমাদের আচার ব্যবহারের মাধুর্য দেখে দলে দলে অমুসলিমরা মুসলিম হবে,
চলো আমরা অনুসরন করি আল্লাহর দেয়া জীবন বিধান।
পরিনত হই জীবন্ত কুরআনে।
তবেই আমাদের সৃষ্টিকর্তা আমাদের মুক্তি দিবেন নতুন অতিথি করনা ভাইরাসের আক্রমণ ও ধ্বংসলীলা থেকে।
---------রহিমা খাতুন
২৪/০৩/২০২০

Post a Comment

Previous Post Next Post